অনলাইন ডেস্কঃ মহান আল্লাহ ও তার প্রিয়নবী হয়রত মুহম্মদ (স.) রোজাদারদের যেসব আমল করার কথা বলেছেন তন্মধ্যে কয়েকটি আজ উল্লেখ করা হলো।
রোজার শিষ্টাচার: রোজারতদের রোজার শিষ্টাচার মানা অত্যন্ত জরুরি। এসব শিষ্টাচার রোজা না রাখলেও মেনে চলাটা সভ্য মানুষের জীবনযাপনের লক্ষণ। কুরআন-সুন্নাহ মতে, রোজারতদের পাপ কাজ থেকে রিরত থাকতে হবে। যেমন, মিথ্যা কথা বলা, অপরের দোষ চর্চা করা, ঝগড়া বিবাদ করা, গালাগালি করা, দৃষ্টির হেফাজত করা, সুদ, ঘুষ বর্জন ইত্যাদি। যারা এসব কাজ থেকে বিরত থাকে না, হাদিসে সতর্ক করে বলা হয়েছে, তাদের রোজা আল্লাহর কোনো প্রয়োজন নেই। আবু হুরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত; রাসূল (স.) ইরশাদ করেছেন, যে ব্যক্তি পাপ, মিথ্যা কথা, অন্যায় কাজ ও মূর্খতাসুলভ কাজ ত্যাগ করতে পারে না, তার পানাহার ত্যাগ করাতে আল্লহতায়ালার কোনো প্রয়োজন নেই। (সহিহ বুখারি: ১৯০৩)।
কুরআন তেলাওয়াত: যেহেতু রহমত, মাগফেরাত, নাজাতের মাস রমজান। সেক্ষেত্রে রোজাদাররা বেশি বেশি পবিত্র কুরআন তেলোওয়াত করলে আল্লাহর বিশেষ নেয়ামত হাছিল করেত পারবেন।
মহান আল্লাহ তায়ালা রমজানের পরিচয় দিতে গিয়ে বলেছেন, রমজান হলো এমন মাস, যে মাসে কুরআন নাজিল করা হয়েছে। তাছাড়া রমজানে প্রতিটি আমলকে ৭০ গুণ বাড়িয়ে দেওয়া হয়।
নামাজে মনোনিবেশ: সালাহ্ বা নামাজ পাপাচার থেকে মানুষকে মুক্ত রাখে। রাসূল (স.) ইরশাদ করেছেন, যে ব্যক্তি রমজানে (রাতের বেলা নফল) নামাজে দাঁড়িয়ে থাকে, ইমানের সঙ্গে ও সওয়াবের আশায় তার পূর্বের সব গুনাহ ক্ষমা করে দেওয়া হবে। (সহিহ বুখারি:৩৭)।
অন্য হাদিসে কিয়ামুল লাইল তথা রাতের নামাজের আদেশও দেওয়া হয়েছে। এর দ্বারা উদ্দেশ্য হচ্ছে তারাবির নামাজ আর এর চূড়ান্ত পর্যায় হলো তাহাজ্জুদের নামাজ। তাই আমাদের উচিত গুরুত্বের সঙ্গে রাতে তারাবির নামাজ আদায় করার পাশাপাশি তাহাজ্জুদের নামাজ এবং অন্যান্য নফল নামাজেও নিয়মিত হওয়া।
কায়মনে দোয়া: রমজানের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ আমলগুলোর অন্যতম আমল হলো বেশি বেশি দোয়া করা। কেননা হাদিসে বর্ণিত আছে, রমজানে সবচেয়ে বেশি দোয়া কবুল করা হয়। বিশেষ করে ইফতারের পূর্ব মুহূর্তের দোয়া। তখন নিজের গুনাহগুলোর জন্য ক্ষমা চেয়ে দোয়া করা কাম্য।
এ মাসে আল্লাহ তায়ালা ক্ষমার দরজা উন্মুক্ত করে দেন। আল্লাহতায়াল বলেন, যে কেউ আল্লাহকে ভয় করবে, তিনি তার গুনাহগুলোকে ক্ষমা করে দেবেন এবং তার পুরস্কার অনেক বাড়িয়ে দেবেন। (সূরা তালাক:৫)।
আরও পড়ুন রোজায় গুরুত্বপূর্ণ ৩০ আমল
ইফতার: আবু হুরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসূল (স.) ইরশাদ করেছেন, যে ব্যক্তি কোনো রোজাদারকে পানাহার করিয়ে ইফতার করাবে, সে তার অনুরূপ সওয়াব লাভ করবে। (মুসান্নাফে আবদুর রাজ্জাক:৭৯০৬)।
অন্য রোজাদারকে ইফতার করানোর মাধ্যমে আমরা কিন্তু সহজেই একটি রোজার সওয়াব পেয়ে যাচ্ছি এবং আমরা যারা শহরে থাকি, আমাদের জন্য সুবর্ণ সুযোগ হলো, অনেক মানুষ ইফতারের সময় গাড়ি থেকে নেমে ভালোমন্দ ইফতার করতে পারেন না। আমরা যদি তাদের ইফতারে সহযোগিতা করতে পারি, তাহলেও আমরা মহাসৌভাগ্য অর্জন করতে পারব।
দান: রমজানে দানের গুরুত্ব অনেক বেশি। এ মাসকে দানের মাসও বলা হয়, কেননা এ মাসে একটি নফল ইবাদত করলে একটি ফরজের সমান সওয়াব। আর একটি ফরজ ইবাদত করলে ৭০টি ফরজের সওয়াব দেওয়া হয়। রমজানে নবি রাসূল, সাহাবায়ে কেরাম এবং সালফে সালেহিনরা প্রচুর পরিমাণে দান করতেন।
জিকির: রমজানে বেশি বেশি জিকির-আসকার করাও গুরুত্বপূর্ণ একটি আমল। অন্যান্য মাসের তুলনায় এ মাসে তূলনামূলক আমরা একটু অবসর থাকি বেশি। তাই অবসর সময়টুকু অপচয় না করে হাঁটতে-বসতে বেশি বেশি জিকির করা কাম্য।
তথ্যসূত্র: সংগৃহীত
Leave a Reply